কবুতর বা পায়রা বা কপোত বাপারাবত এক প্রকারের জনপ্রিয় গৃহপালিত পাখি। এর মাংস মনুষ্যখাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন যুগে কবুতরের মাধ্যমে চিঠি আদান-প্রদান করা হত। কবুতর ওড়ানোর প্রতিযোগিতা প্রাচীন কাল থেকে অদ্যাবধি প্রচলিত আছে।
গৃহপালিত কবুতরের বৈজ্ঞানিক নাম Columba livia domestica। সব গৃহপালিত কবুতরের উদ্ভব বুনো কবুতরColumba livia থেকে।
পৃথিবীতে প্রায় ২০০ এর অধিক প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায় । এর মাঝে বাংলাদেশেই ৩০-৪০ প্রজাতি বা এর অধিক কবুতর পাওয়া যায় । উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশের আবহাওয়া কবুতর পালনের জন্য উপযুক্ত হওয়ার বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায় ।
এই লেখাতে কিছু সংখ্যক পায়রার নাম , মূল্য এবং এর ছবি দেয়ার চেষ্টা করবো ।
পোষা পাখিদের মধ্যে কবুতর অন্যতম। সুপ্রাচীনকাল থেকে শখের জন্য কবুতর পালন করা হচ্ছে। তবে ইদানিং অনেকে কবুতর পালনকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ বিকল্প আয়ের উৎস হিসাবে কবতর পালন শুরু করছে ।
কবুতরেরর জাত বা ধরনগুলো নির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন রং, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, চোখ ইত্যাদি এর ওপর ভিত্তি করে নামকরণ বা জাত ঠিক করা হয়। এছাড়া ক্রস ব্রিডিং -এর মাধ্যমেও নতুন জাত তৈরি হয়ে থাকে। যদিও ক্রস ব্রিডিং এর জন্য অরিজিনাল জাত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে । তবে আমরা আমাদের দেশের কবুতর এর জাত গুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয় , জাতগুলো হলোঃ
১. গোলা বা গোল্লা বা বাংলা সম্ভবত এইটা বাংলাদেশের সর্বাধিক পালনকৃত কবুতর । প্রায় সবাই তাদের জিবনের প্রথম কবুতর পালন শুরু করে এই জাতের কবুতর দিয়ে । দেশের যেকোনো হাটে-বাজারে পাওয়া যায় । দামেও বেশ কম । আবার তুলনা মুলক পালন খরচ কম , বলতে গেলে একেবারেই নগণ্য । এই জাতের কবুতর নিজের খাবার নিজেই সংগ্রহ করে থাকে । দামঃ বাচ্চা কবুতর ঃ ১৮০ - ২০০ টাকা বয়স্ক ( ডিম/বাচ্চা করে এমন ) ঃ ৪৫০ - ৬০০ টাকা
নোটঃ যেকোনো জাতের কবুতরই ৬ মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে ।
২. জালালি
শত শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে জালালি কবুতর টিকে আছে বাংলাদেশে সিলেটের হযরত শাহ জালাল (র)-এর মাজারে। ধর্মপ্রাণ সিলেটের মানুষের বিশ্বাস- এই কবুতর হারিয়ে যেতে পারে না। তাই প্রায় ৭০০ বছর ধরে কবুতরের এই বিশেষ প্রজাতির ওড়াউড়িতে মুখরিত শাহজালাল (র)-এর মাজার। জালালি কবুতরের মাথা-পিঠ-বুক ঘন-ধূসর, ঘাড়-গলা ধাতব সবুজ, তার ওপরে গোলাপি রঙের আভা। ডানার প্রান্তে যেমন দুটো চওড়া কালো ব্যান্ড আছে, তেমনি লেজের আগায় আছে কালচে একটি আড়াআড়ি ব্যান্ড। পা লালচে, ঠোঁট কালচে। ঠোঁটের গোড়ায় সাদা রং। জালালি কবুতর স্বতন্ত্র প্রজাতির না হলেও এর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর নামের সাথে মিল রেখে এই কবুতরের নামকরণ।
দামঃ বাচ্চা কবুতর ঃ খুব তাড়াতাড়ি সংযোজন করা হবে বয়স্ক ( ডিম/বাচ্চা করে এমন ) ঃ খুব তাড়াতাড়ি সংযোজন করা হবে
ছবিঃ
(ii) গিরিবাজ বা হাইফ্লায়ার জাতের কবুতর
গিরিবাজ আর হাইফ্লায়ার প্রায় একই জিনিষ। এদের প্রধান উৎপত্তি ভারতে। ভারতে এদের টিপলার নামে ডাকা হয়। মানুষ সাধারণত রেস করার জন্য অথবা হাই ফ্লাই ( কত সময় আকাশে উড়তে পারে ) করার জন্য গিরিবাজ কবুতর পালন করে থাকে।
হাই ফ্লায়ারের কিছু বিখ্যাত জাতঃ (i) ইন্ডিয়ান কালদম (ii)পাকিস্তানি টেডি ইত্যাদি।
১ঃ বাঘা গিরিবাজ কবুতর
২ঃ চুইনা গিরিবাজ কবুতর
৩ঃ কাগজি গিরিবাজ কবুতর
অরিজিনাল কাগজি কবুতর
৪ঃ সুয়াচন্দর গিরিবাজ কবুতর
৫ঃ ঘিয়াসুল্লি কবুতর
৬ঃ ময়নাঝাক কবুতর
৭ঃ জিরা গলা গিরিবাজ কবুতর
(iii) ফেন্সি জাতের কবুতর
ফেন্সি জাতের কবুতর দেখতে বেশ ভালো তাই দাম এবং চাহিদা দুটোই বেশি। নিচে কিছু ফেন্সি জাতের কবুতর দেওয়ার চেষ্টা করছি :D
১ঃ Fantail pigeon বা লাক্কা বা ময়ূরপঙ্খী
লাক্কা কবুতর আবার ইন্ডিয়ান বা ইংলিশ বা দেশি হয় । বৈশিষ্ট কিছুটা আলাদা হয় । আপনি কালো, সাদা, ঘিয়া এলমোন্ড ইত্যাদি রঙের লাক্কা কবুতর দেখতে পাবেন।
২ঃ King Pigeon বা কিং কবুতর
নাম শুনের এর সম্পর্কে ধারনা চলে আসে :v নামেও যেমন কিং সাইজেও তেমন। এর ব্রিড করা হয়েছিলো মূলত গোস্তের জন্য কিন্তু দাম এবং দেখতে সুন্দর বিধায় এখব সবাই শৌখিন হিসেবেই পালন করে ঠাকে ।
৩ঃ Nicobar Pigeon বা নিকোবার কবুতর
বাংলাদেশে খুবই কম পাওয়া যায় । মুল উৎপত্তি জাভা দ্বিপপুঞ্জে।
৪ঃ Victoria Crowned Pigeon ভিক্টোরিয়া ক্রাউন কবুতর
কবুতরের মাঝে সবচেয়ে বড় জাত এটাই। মূলত এদের মাথার পালকের জন্য নামকরণ করা হয়েছে ভিক্টোরিয়া ক্রাউন ।
বাকি তথ্য খুব তাড়াতাড়ি সংযোজন করা হবে । সবার সাহায্য কামনা করছি ।